বাংলা শিল্পী পক্ষের আয়োজনে ‘বঙ্গে বৈশাখ’



বর্তমান সময়ে বাংলার সাংস্কৃতিক জগৎ  এক অদ্ভুত আঁধারের মধ্যে এসে পড়েছে। বলিউড এবং উত্তর ভারতীয় সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আগ্রাসন গত ৭০ বছর ধরে তিল তিল করে ধ্বংস করার চক্রান্ত করে এসেছে  বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে। এর নেপথ্যে প্রথম থেকেই ছিল দিল্লির সরকারের প্রচ্ছন্ন সহযোগিতা ও সমর্থন। হিন্দি সংস্কৃতিকে বাঙালীর উপর চাপিয়ে দিয়ে বাঙালিকে নিজের শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন করার চক্রান্ত চালিয়েছে হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ। বাংলার জনবিন্যাসের দ্রুত হারে পরিবর্তন এই প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করেছে।
 
এমনই এক কঠিন সময়ে বাংলার শিল্পকলাকে তুলে ধরা ও বাঙালী শিল্পীদের বাংলার সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারের স্বার্থে সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে বাংলা ও বাঙালির অধিকার রক্ষার সংগঠন "বাংলা পক্ষ" ও তার সহযোগী সংগঠন "বাংলা শিল্পী পক্ষ" উদ্যোগী হয়েছে। এই উদ্যোগকে কাজে লাগিয়েই গত ১ লা বৈশাখ আশুতোষ মেমোরিয়াল হলে তারা আয়োজন করেছিল এক বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়, ক্যাকটাস ব্যান্ডের সিধু, স্বর্ণযুগের রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী পূরবী মুখোপাধ্যায়, বিখ্যাত রক সঙ্গীত শিল্পী পটা, বিখ্যাত সাহিত্যিক মনোরঞ্জন ব্যাপারী সহ অন্যান্য গুণীজনেরা।
 
অনুষ্ঠান শুরু হল জাতির ভবিষ্যৎ এক বালকের বাংলা মাকে অভয় বাণী শোনানোর মধ্য দিয়ে--"তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি।" এরপর প্রতুল বাবুর গলায় 'আমি বাংলায় গান গাই' শুনে মন্ত্রমুগ্ধ হলেন সকল শ্রোতা । "তুই আমায় পাগল করলি রে" গেয়ে মঞ্চ মাতালেন সিধু। সিধু, পটা দুজনেই বললেন বাংলা গানকে হিন্দি আগ্রাসন থেকে মুক্ত করার কথা। পূরবী মুখোপাধ্যায়ের মধুর কণ্ঠ শুনে শ্রোতারা ফিরে গেলেন স্বর্ণযুগে। 'ফোক আস' নামের লোকসঙ্গীতের ব্যান্ড অসাধারণ কিছু গান গেয়ে আরও জমজমাট করে তুলল পয়লা বৈশাখের সন্ধ্যা। শুধু সঙ্গীতানুষ্ঠানই নয়; নৃত্য, আবৃত্তিতেও মুখর হয়ে উঠল আশুতোষ হল। বাংলার নানা ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেদের এদিন সংবর্ধনাও জানাল বাংলা শিল্পী পক্ষ। বাংলা শিল্পী পক্ষের সদস্যরা বাংলার শিল্পীদের সংগঠিত করার ও নতুন নতুন শিল্পীদের প্রতিবছর এমন ভাবে সুযোগ করে দেওয়ার শপথ নিয়ে বরণ করে নিলো নতুন বছর ১৪২৬ কে।
 








একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ