কেন ফেসবুকে মন্তব্য করি না?।।ইমতিয়াজ মাহমুদ


(১) 
চট করে কারো পোস্টে মন্তব্য করিনা বা প্রতিক্রিয়া দেখাইনা বটে, কিন্তু আপনাদের সকলের নানাপ্রকার পোস্ট ইত্যাদি ঠিকই দেখি। কবিদের কবিতা পড়ি, রাজনৈতিক কর্মীদের মতামত পড়ি, নারীবাদীদের প্রতিবাদ পড়ি, খুচরা টুকটাক হাসি ঠাট্টা ধরনের কথাবার্তা যেসব পোস্ট করেন আপনারা সেগুলিও দেখি। জটিল সব বিষয়ে আপনাদের জলবৎ স্পষ্ট মতামত, এমনকি যেসব নিতান্ত ভিত্তিহীন এবং হাস্যকর সেগুলিও, সব পড়ি। সবসময় বিস্তারিত পড়া হয়না, বুঝতেই পারছেন, উকিল মানুষ, বিনা ফিসে কত আর পড়বো! একটা কথা আছে, শুনেছেন হয়তো, বিনা পয়সায় কোন উকিল প্রেমপত্রও পড়ে না। 

না, কথাটা এমনিতে ঠাট্টার জন্যে বলা বটে, তবে নেহায়েত ভুল না। উকিলের তো কাজই হচ্ছে পড়াশুনা আর লেখা ও বলা। উকিল কাগজপত্র পড়বে, বই পড়বে, মক্কেলের কথা শুনবে, প্রতিপক্ষের কথা ইত্যাদি শুনবে আর নিজের মতামতটা জানাবে লিখে অথবা মুখে বলে। ব্যাস, এইটুকুই উকিলের কাজ। জজ হাসেব্দের সামনে আমরা যে তর্কটুকু করি, সেটাও আসলে আমাদের মতামত তুলে ধরা। উকিল কোন তথ্য দেয় না, প্রমাণিত বা স্বীকৃত তথ্যের ভিত্তিতে উকিল কেবল মতামত দেয়। এজন্যে উকিল কখনো মিথ্যা কথা বলে না। 

এইখানে লোকে একটু চমকে ওঠে জানি। কিন্তু এইটাই কথা। ওকালতির সাথে মিথ্যাচারের সেরকম কোন সম্পর্ক নেই। যেসব উকিল মিথ্যাচার করে, ওরা আসলে উকিল না। ওরা তাইলে কি? ভদ্র ভাষায় ওরা হচ্ছে উকিল অযোগ্য উকিল, আইনকানুন জানে না। আর শুদ্ধ ভাষায় সংক্ষেপে ওদেরকে বলতে পারেন কালো কোট পরা কাউয়া। উকিলদেরকে দেখবেন, ওরা পরস্পরকে 'বিজ্ঞ বন্ধু' বলে সম্বোধন করে। বিজ্ঞ কেন? কারণ একজন উকিলকে তার দেশের প্রচলিত আইন ও নীতির ভিত্তিতে প্রতিটি ঘটনায় যথাযথ মতামত দেওয়ার দক্ষতা থাকতে হয়। এইজন্যেই সে বিজ্ঞ। 

যে উকিল সাহেবের মতামত তৈরির জন্যে বানানো ঘটনার সাহায্য নিতে হয়, তিনি তো আর যই হোক বিজ্ঞ লোক না আরকি। এইজন্যে মিথ্যাচারী উকিল সাহেব উকিলও না, উকিলের জাতও না। 

(২) 
এক কথা থেকে আরেক কোথায় চলে যাচ্ছি আবারও। কথা হচ্ছিল ফেসবুকের নিউজফিডে অন্যদের পোস্ট ইত্যাদি পড়া নিয়ে। সেগুলি আমি পড়ি। আমার পোস্টে আপনারা যেসব মন্তব্য করেন সেগুলিও পড়ি। সবসময় প্রতিক্রিয়া দেখাই না, তার একাধিক কারণ আছে। কিন্তু পড়ি। 

সম্প্রতি আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা একজন লন্ডন প্রবাসী নারী লেখকের পোস্টে দেখলাম এক লোক খুব বাজে মন্তব্য করেছে। লেখিকার পোস্টটা খুবই হালকা ধরনের, যে তিনি বেহেশতে যেতে চান না, কি হবে বেহেশতে গিয়ে, সেখানে তো পুরুষদের জন্যে আছে হুর, নারীদের জন্যে নয়। তার চেয়ে বরং তিনি দোজখেই যেতে চান, কারণ সেখানে কবিরা থাকবেন, দার্শনিকরা থাকবেন, ওদের সাথে বাৎচিত করবেন ইত্যাদি। এইরকম কথাবার্তা তো নতুনও কিছু না, অভিনব কিছুও না। আমি ছোটকাল থেকেই আমাদের চারপাশে লোকজনের মুখে এইরকম কথা বহুবার শুনেছি। বেহেশতে গিয়ে কি লাভ, তার চেয়ে দোজখে যাই, সেখানে মেরিলিন মনরো থাকবেন এইরকম কথা আপনি শোনেননি কখনো? 

তো একজন সেখানে কমেন্ট করতে গিয়ে নারী লেখকটিকে বলেছেন 'প্রস্টিটিউট'। এইটা তো কোন ভদ্রলোকের কাজ না আরকি। অন্যান্য মন্তব্য থেকে জানলাম যে এই লোকটি নাকি আবার একটু শিল্প সাহিত্যও করেন। কৌতূহল হলো, দেখি তো কে এই ভদ্রলোক? ওর প্রোফাইলে গিয়ে দেখি, সত্যিই নিতান্ত ভদ্রলোক দেখতে একজন সুদর্শন যুবক। পোস্ট ফোস্ট যা কয়েকটা দেখলাম বেশ ভালো করেই লিখেছেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়এর কথা লিখেছেন একখানে, রবীন্দ্রনাথের ছবি। সফেদ বস্ত্র পরা উনার নিজের ছবিও আছে বেশ কিছু। নিতান্তই একজন শিল্পরসিক পড়ালেখা করা ভদ্রলোক। 

তিনি কেন এইরকম বাজে কথা বলতে গেলেন? দেখলাম যে তিনি আবার তাঁর এই মন্তব্যের সমর্থনে বেশ কায়দা করে বিশাল একটা পোস্ট লিখেছেন। একটি মিথএর কোথাও উল্লেখ করেছেন। ওর সেই পোস্টের নিচে দেখলাম আরও কিছু লোক একদম সেই নারী লেখকটির চরিত্র হননে নেমেছে। 

(৩) 
এরা কেন এরকম করে এটা কি আপনি কখনো ভেবেছেন? গত দুদিনে তসলিমা নাসরিন দুইটা পোস্ট দিয়েছেন ওর অভিজ্ঞতা জানিয়ে। ওঁর বক্তব্যের বিরোধিতা যারা করতে আসেন, বিশেষ করে ধর্ম প্রসঙ্গে, ওরা কখনো তর্ক করে না। যুক্তিতর্কের কিছু নাই, সোজা গালি। তসলিমাকে যে কি পরিমাণ গালাগালি হুমকি শুনতে হয় প্রতিদিন সে তো আপনারা জানেনই। এরকম আরও উদাহরণ আছে। আমাদের লাকি আক্তার, সুপ্রিতি ধর থেকে শুরু করে আমি অসংখ্য নারীর উদাহরণ দিতে পারি যারা প্রতিদিন এইরকম হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। 

নারীদেরকে তো এরা এইভাবে গালাগালি করেই। পুরুষদের মধ্যে যারা একটু ওদের অপছন্দের কোথা বলে ওদেরকে যখন গালাগালি করতে যায়, তখনও লক্ষ্য করবেন এদের আক্রমণের লক্ষ্য থাকে সেইসব পুরুষদের মা বোন বা স্ত্রী এরা। আপনি আসিফ মহিউদ্দিন অনন্য আজাদ বা এইরকম কয়েকজনের ওয়ালে বা অন্যত্র ওদের প্রসঙ্গে লোকজনের মন্তব্য দেখলেই বুঝবেন। গালির লক্ষ্য গালির বিষয়বস্তু সবসময়ই একজন নারী। এগুলি পুরুষরা কেন করে ভেবেছেন কখনো? নারীর প্রতি ওদের কেন এতো ঘৃণা এতো ক্রোধ? আমি এইখানে সংক্ষেপে দুইটা কি তিনটা কারণ বলি। দেখেন, যুক্তিযুক্ত মনে হয় কিনা। 

তার আগে মুল কথাটা বলে রাখি। এইসব ক্ষেত্রে দেখবেন নারীটিকে যেসব কথা বলে হেয় করার চেষ্টা করা হয় সবগুলির মুল সুর হচ্ছে হয় নারীটিকে ধর্ষণের হুমকি অথবা নারীটিকে 'চরিত্রহীনা' বলে চিহ্নিত করা। চরিত্রহীনা মানে কি? মানে হচ্ছে তিনি নিজের ইচ্ছায় যৌনকর্ম করেন। পৃথিবীর অন্যত্র কোথায় কতোটুকু এই ধারনা বদলেছে জানিনা, কিন্তু আমাদের সমাজে যে নারী তাঁর নিজের ইচ্ছায় নিজের পছন্দমতো নিজের পছন্দমতো সঙ্গম করতে চান তিনিই চরিত্রহীনা। এবং চরিত্রহীনতাই হচ্ছে আমাদের দৃষ্টিতে নারীর সবচেয়ে ঘৃণ্য ত্রুটি। 

এই ধারনাগুলির ভিত্তি কথাটা কি? ভিত্তির কথা বা মুল কথাটা হচ্ছে যে নারী একটি বস্তু বা প্রোপার্টির মত যার শরীরের উপর, বিশেষ করে তার যৌনাঙ্গের উপর, থাকবে একটি পুরুষের একচেটিয়া অধিকার বা মনোপলি। অন্য ভাষায় যেটাকে ভারজিনিটি বা কুমারিত্ব বলে, সেটা। যে নারীর ক্ষেত্রে এইটার ব্যাত্যয় হবে, অর্থাৎ যে নারী তাঁর শরীরের উপর পুরুষের মালিকানা বিশেষ করে একজন পুরুষের মনোপলি মানবে না, বা যে নারীকে তার মালিক ছাড়া অন্য কেউ 'খেয়ে দিবে' সে হচ্ছে মন্দের চরম মন্দ- একদম অধঃপতিত। এইটাই হচ্ছে সেইসব গালির লজিক- ঐ যে নারীকে যেসব গালি দেয়। 

(৪) 
তাইলে পুরুষরা এইসব গালি কেন দেয়? এই যে নারীর প্রতি আচরণ- ধর্ষণ ধর্ষণের হুমকি বা 'চরিত্রহীনা' বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা- এটা পুরুষরা কেন করে? এইটা কি ধরনের আচরণ? এটা পুরুষের রাজনৈতিক আচরণ। রাজনৈতিক? জি। এটা আওয়ামী লীগ বিএনপি বা সিপিবি জামাত না, এটা হচ্ছে পুরুষ এবং নারীর হাজার বছর ধরে চলমান রাজনৈতিক সংঘাতের একটা অংশ মাত্র। সংঘাতটা কি? সংঘাতটা হচ্ছে পুরুষ সবসময়ই চেয়েছে নারীকে তার ডান হস্তের অধীন একটি সম্পদ হিসাবেই রাখবে আর নারী চেয়েছে নিতান্ত একটু সতন্তর স্বাধীন মানুষ হিসাবে স্বীকৃতি। এইটাই সংঘাত। এই সংঘাতটাই এখনো চলমান। 

ঠিক আছে, বুঝলাম, পুরুষ নারীকে তার অধিনস্ত রাখতে চায়, কিন্তু তার সাথে ধর্ষণের কি সম্পর্ক? গালাগালির কি সম্পর্ক? নারীকে সম্পদ হিসাবে দেখি ঠিক আছে, কিন্তু তাকে তো আমি সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হিরা জহরতের মতো মূল্যবান মনে করি। তাইলে? তাছাড়া এইসব পুরুষরা ওদেরও তো মা থাকে, বোন থাকে, স্ত্রী থাকে, কারো কারো কন্যা সন্তানও থাকে এবং তাদের প্রতি এই গালিদাতা পুরুষটির ভালোবাসার তো কোন কমতিও হয়তো নাই। তাইলে? 

আধিপত্য। ধর্ষণ যে কোন পুরুষ শুধু যৌন তৃপ্তির জন্যে করে না সেটা তো আর বিস্তারিত বলা কিছু নাই। ধর্ষণের মতোই, এই যে নারীকে গালাগালি করা যা হেনস্তা করা এটাও পুরুষের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার এবং আধিপত্য পুনঃ পুনঃ ব্যক্ত করারই একটা হাতিয়ার মাত্র। এই যে পুরুষরা কথায় কথায় গালি দেয়, 'তোর মাকে ...' বা 'তোর বোনকে' ইত্যাদি- এটা কি? এটা হচ্ছে এক কথায় প্রকাশ। বিস্তারিত বক্তব্যটা হচ্ছে যে তোর মা বা তোর বোন যে নারীরা আছে, যেটার মালিকানা তোর বাপের বা তোদের পরিবারের পুরুষদের, ওদেরকে নষ্ট করে দিব। এই কথাটার পূর্বানুমানটা কি? যে ওদেরকে একবার করে দিলেই ওরা হয়ে যাবে অধঃপতিত, বাতিল মাল।

আর নারীকে যখন কেউ সরাসরি গালি দেয়, 'চরিত্রহীনা'বোধক নানাপ্রকার খারাপ শব্দে, সেগুলির অর্থ কি? সেগুলির অর্থ হচ্ছে যে তুই নিজের ইচ্ছায় নিজের পছন্দমতো পুরুষের সাথে সঙ্গম করিস, তুই নারিদেহের উপর একজন পুরুষের মনোপলি মানিস না, সুতরাং তুই মন্দ। 

নিজের পরিবারের নারীদের ব্যাপারে দেখবেন যে ওরা দাবী করবে যে না, আমার স্ত্রী বা আমার বোন বা আমার কন্যা সে তো তার শরীরের উপর একজন পুরুষের মালিকানাই মেনে চলে সুতরাং ওরা ভালো। এইজন্যে অপর একজন পুরুষ যখন ওকে 'খা... পোলা' বলে গালি দেয়, সেটা ওর গায়ে তীব্র আগুণের মতো লাগে। কেননা সে তো মনে করে যে একাধিক পুরুষের সাথে সহ্য যে নারী সে অধঃপতিত, পচা, সিদলি। 

(৫) 
না, সকল পুরুষ ধর্ষণ করে না বা কথায় কথায় নারীকে ধর্ষণের হুমকি হয়তো দেয়না। ঐ যে সফেদ পোশাক পরা শিল্প সাহিত্য করা ভদ্রলোক, সে তো আর কথায় কথায় বলবে না, মাগী তরে ...। ভদ্রলোকেরা এরকম বলে না কারণ এরকম বলাটা এখন আর পলিটিক্যালি কারেক্ট না। কিন্তু মুল জায়গাটায় যদি ধরেন, মানে ধর্ষণ এবং গালাগালির যে রাজনৈতিক ভিত্তি, সেখানে কিন্তু প্রায় সকল পুরুষই একই চেতনা ধারণ করে- যে নারী হচ্ছে সম্পদ, পুরুষের সম্পদ এবং প্রতিটি নারীর দেহের উপর বিশেষ করে তার যৌনাঙ্গের উপর থাকতে হবে একজন পুরুষের মনোপলি। 

ঐখানে প্রায় সকল পুরুষ, ঐ গালিবাজ বলেন আর কবিতা পড়া বা কবিতা লেখা সুশীল বলেন, একই। ধর্মবেত্তা ধর্মগুরু আর মোরাল পুলিশদের কথা আর বললাম না, ওরা হচ্ছে মোড়ল। আর আমি 'প্রায় সকল পুরুষ' বলছি বটে, আসলে 'প্রায়' কথাটা না বললেও হয়, কারণ ব্যতিক্রম যারা আছেন তার সংখ্যায় এতো কম যে সেটাকে পরিসংখ্যানের হিসাবে উপেক্ষা করা যায়। 

আপনি চারপাশে তাকিয়ে দেখবেন, দুই চারটা কথা বললেই নারী সম্পর্কে পুরুষের আসল দৃষ্টিভঙ্গি বেরিয়ে যাবে। দেখবেন সেখানে ডান বাম সেন্টার সকলেই এক কাতারে- বিশেষ করে ঐ মুল জায়গাটায়। ব্যতিক্রম যাও পাবেন, সেগুলির মধ্যে শতকরা আশিভাগ সম্ভাবনা আছে যে আপনি ভুল করছেন অথবা লোকটিকে আরও পরীক্ষা করতে হবে। 

এইরকম গণহারে সকল পুরুষকে মন্দ বলছি কেন? আসলে মন্দ বলছি না- পুরুষই বলছি। এটা পুরুষ জন্মেরই অনিবার্য পরিণতি। এই যে পুরুষতন্ত্রের বিষ, এটা আমাদের শিরায় শিরায় ধমনিতে ধমনিতে রক্তের সাথে মিশে আছে। পুরুষতন্ত্রকেই প্রাকৃতিক বিধান জেনে আমরা বড় হয়েছি। এটাই পরুষের স্বাভাবিক প্রবণতা। এখান থেকে বের হয়ে আসার কাজটা একজন পুরুষের জন্যে একটা বিরাট সংগ্রাম। কেবল ভালমানুষ বা ভদ্রলোক হলেই আপনি পুরুষতন্ত্রের বিষ আপনার চেতনা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারবেন না। 

এবং এটা ধর্মের চেয়েও প্রবল শক্তিসম্পন্ন। ধর্মগুলি সকলেই পুরুষতন্ত্রকে ধারণ করে, পুরুষতন্ত্রের উপর ভিত্তি করেই প্রতিটা ধর্ম চলে। পুরুষতন্ত্র আগে, ধর্ম এসেছে পরে। পুরুষতন্ত্র হচ্ছে ভিত্তি- আর ধর্মগুলি হচ্ছে একই ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত একেকটা ক্যাম্প। সেজন্যে দেখবেন নারী প্রশ্নে সকল ধর্মের মৌলিক নীতিমালা একই। 

(৬) 
আজকে এই পর্যন্ত। তবে কথাটা শেষ হলনা। আরেকদিন বলি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ