দাঙ্গাকারীদের তথ্য বিকৃতির বিরুদ্ধে সচেতন হোন।। রাণা



দাঙ্গায় উস্কানি দেওয়ার জন্য মৌলবাদীদের পক্ষ থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে যে ভারতের জনগণনা অনুযায়ী ১৯৫১ সালে ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ৯.৮%। ২০১৭ সালে ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা হয়েছে ২৭%। আর ২০৪১ সালে ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা হবে ৮৪.৫%। অর্থাৎ ভারত মুসলিম জনঘনত্বের দেশ হবে।

এইধরনের প্রচার চালানোর জন্য বিজেপি পয়সা দিয়ে লোক রাখে। যাতে আমাদের রাজ্যে কাল্পনিক ভয়ের সৃষ্টি হয় ও লোকে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতির ধারক ও বাহক বিজেপিকে ক্ষমতায় আনে।
আমরা ভারতীয় সরকারের দেওয়া সঠিক তথ্য যাচাই করি।

১৯৫১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ৯.৮%।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ১৪.২%।
অর্থাৎ গত ৬০ বছরে দেশে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে ৫.২%।

১৯৫১ সালের জনগণনা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ১৯.৮৫%।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ২৭.০%।
অর্থাৎ গত ৬০ বছরে রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে ৭.১৫%।

বিজেপির সমর্থকদের মিথ্যা প্রবচন দেখুন। ১৯৫১ সালের ভারতের মুসলিম জনসংখ্যাকে (৯.৮%) ঠিক রেখে ২০১১ সালের পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম জনসংখ্যাকে (২৭%) ২০১৭ সালের ভারতের মুসলিম জন্সংখ্যা বলে প্রচার করছে। ফলে লোকের মনে ভীতিপ্রদ ১৭.২% মুসলিম জনসংখ্যার বৃদ্ধি দেখানো হচ্ছে।

আরো অবাক করা কান্ড দেখুন। ভারতে প্রতি দশবছর অন্তর জনগণনা হয়। ২০১১ সালের পর ভারতের জনগণনা হবে ২০২১ সালে। তাহলে বিজেপির সমর্থকেরা ২০১৭ সালের জনগণনার হিসেব কিভাবে পেলেন?

বিজেপিরা নিজেদের তথ্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে কিছু ভুঁইফোড় সমীক্ষক সংস্থার নাম ব্যবহার করে। এখানে এরা আমেরিকার The institute of world demographics research সংস্থার সমীক্ষার কথা বলেছে। যাদের দাবি অনুযায়ী ২০৫০ সালে ভারতে মুসলিমরা প্রবল সংখ্যাগুরু হয়ে পড়বে। অনেক খুঁজেও The institute of world demographics research সংস্থাকে খুঁজে পাওয়া গেল না। তবে অন্য এক সংস্থার নাম পাওয়া গেছে। আমেরিকাস্থিত Pew Research Centre- র নাম পেলাম। যারা সারাবিশ্বে জনসংখ্যা বিষয়ক সমীক্ষা করে। Pew Research Centre- র সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতে মুসলিমদের জনসংখ্যা ৮০% হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এদের তথ্যকেই ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম যেমন রেফারেন্স হিসাবে নিয়েছে, সেভাবে বিজেপি সমর্থকেরাও এদের তথ্যকে বিকৃত করে প্রচার চালাচ্ছে, যাতে রাজ্যে সংঘর্ষ লেগে থাকে ও রাজ্যের শান্তি বিঘ্নিত হয়।

মাথায় রাখুন বিজেপি দেশপ্রেমী নয়, গদিপ্রেমী।

(যারা না বুঝে এইসব মিথ্যে প্রচার চালাচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই আইনকে নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন। সচেতন হোন।)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ