এক সকালের গল্প বলি-
রৌদ্রজ্জ্বল প্রকৃতিপূজায়,
নিত্য ব্যস্ত আমার হৃদয়;
সবুজপত্র আর হিমেল বাতায়নবর্তিনী,
পরস্পর যেন আনন্দ ক্রীড়াকৌতুকে মত্ত;
হঠাৎ একটি প্রশ্নবাণ ছিন্নকারী এ ভাবনার জাল-
হে মানুষ, তুমি কি ভীতসন্ত্রস্ত?
বিস্ফোরিত নেত্রপাত-
অতিসত্বর অশ্রুস্নাত হয়ে উঠলো;
আমি অনাগত প্রজন্মান্তরে-
নিজেকে তিরস্কৃত হতে দেখলাম!
লজ্জাবোধ করছিলাম ঘটিত ঘটনা বর্ণনে;
আমি আরশির সম্মুখীন-
সত্য ব্যতিরেক মনুষ্যমুক্তি অসম্ভব,
হ্যাঁ, আমি স্বীকারোক্তি দিলাম-
আমি অনস্তিত্বের অস্তিত্ব দেখে আতঙ্কিত,
কার্যকারণে ফল অমানবের এক পৃথিবী!
একজন সন্ত্রাসী সমাজবিরোধীকে যতটা না ভয়-
একজন ধর্মপ্রাণ মানুষ আজ তাঁর থেকে ভয়ঙ্কর;
যে ধর্মের বাণী জগত জুড়ে শান্তিবৃষ্টি করাবে,
রক্তস্নাত ধর্মের ধ্বজাবাহীগণ;
অস্তিত্বহীন সত্ত্বার নৃশংস রূপদর্শন!
রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে-
ক্ষমতাসীন আর ক্ষমতাহীনের লড়াই কিছু নয়,
জয়বাংলা বাংলাদেশ জিন্দাবাদ তেজহীন আজ,
আল্লাহু আকবার-নারায়ে তাকবীর তেজোদৃপ্ত;
ধর্মান্ধ রাষ্ট্রব্যবস্থায় প্রগতিবিরুদ্ধ চর্চাক্ষেত্র;
মানবতা যেন ধর্মের দাসত্ব নিয়েছে,
সংখ্যালঘিষ্ঠের মতপ্রকাশ আত্মহনন সম;
ধর্মপ্রচারের নামে কুৎসা উগ্রতা ছড়ানো জায়েজ,
ধর্মীয় কুপ্রকৃতি উন্মোচন অনুভূতিতে আঘাতসম;
যেন ধর্মহীনের মানবীয় গুণাবলি অচ্ছুৎ!
যেথায় বিজ্ঞান প্রচার প্রসার নামমাত্র-
যেথায় গ্রন্থাগার স্থাপনে অর্থসংকট-
যেথায় তথ্যপ্রযুক্তি বইয়েই সীমাবদ্ধ-
যেথায় অ্যানরয়েড সেট বদ্ধ জ্ঞান অঙ্গন-
যেথায় আড্ডা মানে একসাথে গেইম বা ফেবু-
যেথায় শিক্ষাব্যবস্থা বাণিজ্যভিত্তিক-
যেথায় সৌদি-পাকি ঘেষা সংস্কৃতিচর্চা হয়-
যেথায় ধর্মের নামে মানুষ হত্যা জায়েজ করা হয়-
যেথায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি বিদ্বেষ প্রণোদিত-
যেথায় ধর্ষণ বিচারহীনতায় সাধারণ ঘটনা হয়-
যেথায় মাদ্রাসাভিত্তিক পঙ্গু শিক্ষার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক ও উগ্র তরুণ প্রজন্ম সৃষ্টির প্রয়াস-
আমরা কবে মানুষকে মানুষরূপে দেখবো-
আমরা কবে ধর্মের এ জাল ছিন্ন করে বেরুব-
আমরা কবে স্বপ্নের স্বাধীন বাংলার স্বাদ পাবো-
একবারো কি লজ্জা হয়না-
একবারো কি প্রশ্ন জাগেনা-
কোন গ্রন্থ, কোন কিতাব, কোন ধর্ম মানবজাতির বিকাশ সাধন করেছিলো?
আজ পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো কোন ঐশীশক্তির প্রভাবে তাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এনেছিলো?
আধুনিক সমাজজীবনে জীবনমান উন্নতকরণে কোনধরনের শিক্ষাব্যবস্থা জরুরি?
মানবতার চর্চা কি ধর্মের বিচারের অধীনস্থ?
কাল্পনিক অনস্তিত্বের অনাচার সৃষ্ট পরিস্থিতি দেখেও কি চোখ বন্ধ করে রাখা সমীচীন?
এমন রক্তাক্ত সকাল আমি চাইনা-
ধর্মের কারণে বন্ধুত্ব হারাতে চাইনা;
এমন সাম্প্রদায়িক সমাজ চাইনা-
পরবর্তী প্রজন্মের কাছে নীচ হতে চাইনা;
এমন আদর্শ বিস্তার চাইনা-
যা মানুষকে অমানব করে দেয়...!
0 মন্তব্যসমূহ