এই পয়লা বৈশাখ বাঙালির জন্য অন্য বার্তা বয়ে আনুক ।। সহেলি চক্রবর্তী


পয়লা বৈশাখ আপামর বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব। বাঙালির কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য মানে বাঙালিয়ানার জন্য সবচেয়ে বড় দিন।

বাঙালি ভুরিভোজে ও নতুন সাজে বৈশাখ আসে। গান-কবিতা-নৃত্যে বৈশাখ আসে। একদিন আপাদমস্তক বাঙালি সেজে পয়লা বৈশাখে মাতে বাঙালি। অনেকের কাছে বাঙালিয়ানা মানে পয়লা বৈশাখ ও দুর্গাপুজো। বছরের বাকি দিনগুলো বাংলা ভাষা কিমবা বাঙালি বিপদে পড়লেও কিছু যায় আসে না। নতুন পাঞ্জাবি বা শাড়ি পরে স্মার্টফোন বা ডিএসএলয়ারে কয়েকটা মনের মতো ছবি তোলাতেই পয়লা বৈশাখের সার্থকতা।

কিন্তু, এভাবে একদিন বাঙালি সাজলে চলবে না। বাঙালিকে আসলেই বাঙালি হতে হবে। বাংলা ভাষা, বাঙালির অধিকার নিয়ে সচেতন হতে হবে। সব বুঝেও, যা হচ্ছে হচ্ছে বলে পাশ ফিরে ঘুমালে কিছু বছর পরে পয়লা বৈশাখ উদযাপনও অস্বাভাবিক হয়ে যাবে। তাই, বাঙালি হিসাবে বাঙালিয়ানাকে সারা বছর ধারণ ও বহন করাই মূল কাজ। এবং বাঙালি হিসাবে অত্যাচারিত হলে, হিন্দি সাম্রাজ্যবাদের হিংস্র থাবায় বাংলা মা আক্রান্ত হলে (যা সব সময় হয়ে চলেছে) ঐক্যবদ্ধ হওয়া, প্রতিরোধ করা সময়ের দাবি। আশার কথা বাঙালি কিন্তু জাগছে, আজকাল কিছুটা চোখেও পড়ছে! আরও বেশি করে জাগবে, জাগতে হবে, কারণ বাংলার আকাশে বড় বিপদের ঘনঘটা।

এই পয়লা বৈশাখ হোক শপথ নেওয়ার দিন। বছরের একটা দিন না শুধু, সর্বাত্মকভাবে বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব আরও জমজমাট হোক। আমরা সকলে প্রতিজ্ঞা করি, বাঙালির বিপদে বাঙালি হয়ে পাশে দাঁড়ানোর, একে অপরকে সাহায্য করার। পড়াশোনা থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য বাঙালিকে অনেক এগোতে হবে।

গত কয়েকবছরে বাঙালিয়ানা ও বাংলা শিল্প-সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে ঢাকার মঙ্গল শোভাযাত্রার আদলে কলকাতাতেও মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়েছে। দিকে দিকে প্রভাত ফেরিও হচ্ছে। আরও সার্বিক হোক। ধর্ম-জাত-পাতের ঊর্ধ্বে উঠে বাঙালি হয়ে পয়লা বৈশাখে মেতে উঠুন।

বেশি করে বাংলা গান শুনুন, বাঙালি খাবার খান, বাংলা ভাষাকে যথাযথ সম্মান দিন এবং বাঙালি জাতির অধিকার নিয়ে সচেতন হোন।

জয় বাংলা!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ